সাজ্জাদ হোসেন সাজু (চরভদ্রাসন প্রতিনিধি) : ফরিদপুর চরভদ্রাসন পদ্মা নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ কাশফুল বনে দর্শনার্থী-পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সকালের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত শেষে মাথার উপর চাঁদ ওঠা পর্যন্ত অবস্থান করেন দর্শনার্থী-পর্যটকরা। এই ভিন্নরকম আনন্দ মেলায় যোগ দিচ্ছেন শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ।বুধবার বিকেলে পদ্মা নদী তীরবর্তী শ্বেতশুভ্র গালিচার মতো সাজানো কাশফুল বন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনকালে এমন প্রাণ-প্রকৃতির মেলবন্ধনের শৈল্পিক আয়োজন চোখে পড়ে।ঋতুর রানী শরতের এখন ভরা যৌবন। শরতের অপরূপ অলঙ্কার নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর বনে বনে শ্বেতশুভ্র স্নিগ্ধ কাশফুল তার অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। আর প্রকৃতির এমন অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতেই ছুটছে প্রকৃতি রসিক লোকজন।(ভিডিও সহ)
চরভদ্রাসন পদ্মা নদী পাড়ের কাশফুলের এ বিশাল সাম্রাজ্য দেখতে তাই প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনা। ওপরে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, সূর্যের তপ্তদহন আর চাঁদের স্নিগ্ধ হিরন্ময় আলো-ছায়ায় কাশবনে মৃদুমন্দ উদাস বাতাসে চলে প্রকৃতিপ্রেমী নারী-পুরুষের লুকোচুরির খেলা। মুখে মুখে শারদ প্রকৃতির গান আর হৈ-হুল্লোড়ে প্রাণ প্রকৃতিকে অবগাহন করে মেতে উঠছেন অনাবিল আনন্দ-উল্লাসে।চরভদ্রাসন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত কাশফুল বনে দেখা হয় একঝাঁক তরুণীর সঙ্গে। তারা সেই সময় লুকোচুরি খেলে এবং দু’হাত মেলে যেন মুক্ত বিহঙ্গের মতো কাশফুল বনে উড়ে বেড়াচ্ছিল। দূর থেকে কাশফুলের এ সাম্রাজ্য দেখে অনেকেরই মনে হতে পারে আকাশের সাদা মেঘের ভেলা জমে বরফ হয়ে নদ-নদীপারের এ বিশাল প্রান্তরকে ঢেকে রেখেছে।
তাই এমন অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগে এখানে ভিড় জমছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। তারা এমন নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করেও স্মৃতির অ্যালবাম সাজিয়ে নিচ্ছেন। ডাক পড়ছে প্রফেশনাল ক্যামেরাম্যানদেরও।
শরতের এ কাশফুল শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের সৌন্দর্যের ক্ষুধাই মেটায় না। এ ফুলের শুকনো গাছ হয়ে ওঠে ঝাড়ু, জ্বালানি, ঘরের বেড়া ও চাল তৈরির উপকরণ।শিউলি ও কাশফুল ফোটানো ঋতুর রানী শরতের আগমনী বার্তা বাঙালি জীবনজুড়ে শিহরণ জাগিয়ে অবস্থান নেয়। দুর্গাপূজা উদযাপনের কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের জন্য এ ঋতু ভিন্ন আনন্দ ও উৎসবের বার্তা নিয়ে আসে।
ভাদ্র ও আশ্বিন মাস এ ঋতুর স্থায়িত্বকাল হলেও আশ্বিন মাসের শেষ হতে না হতেই যেন হেমন্তের মরা কার্তিকের আমেজ দেখা দেয়। আর তখন প্রকৃতির শ্বেতশুভ্র গালিচা কাশবনেও যেন আগুন লাগে। শুকিয়ে ঝরে পড়ে কাশফুলের শ্বেতশুভ্র পালক। আর ক’দিন পরই বেজে ওঠবে ঋতুর রানী শরতের বিদায়ের সুর। শুরু হবে হেমন্তের নবান্নের উৎসবের আবাহন।
বাঙালি জীবন ও সাহিত্যে এই শরৎ ঋতুর বন্দনা শাশ্বত ও অমলিন। এ ঋতু নিয়ে লেখা হয়েছে অসংখ্য কালজয়ী কবিতা ও গান। আপনারা যদি এই কাশবনের এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান,তাহলে ফরিদপুর জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে, চরভদ্রাসন উপজেলা আলম ফকিরের হাট, জাকেরের সুরা, নদীরপাড় অথবা হাজিগঞ্জ খেয়াঘাট,থেকে নৌকায় করে যেতে পারেন,চরভদ্রাসন উপজেলাকে পদ্মা নদীর দুটি ভূখণ্ডে বিভক্ত করেছে,হরিরামপুর ইউনিয়নের চরের অংশে,এ সময় প্রচুর কাশফুলের দেখা মিলে । পরিবার নিয়ে একটি বিকেল কাটানোর উপযুক্ত স্থান বলা চলে এ টি।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply